রাত পোহালেই বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। একদিন আগের রাতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। সমাবেশস্থলেই রাত্রিযাপন করবেন বিভাগের ৬ জেলা ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। এদিকে শনিবার সমাবেশ উপলক্ষে রাতের মধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ। অপরদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের হুলস্থূলের কারণে সমাবেশস্থলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকদের জন্য করা স্টেজ ভেঙে পরে দুই সাংবাদিক আহত হয়েছে।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাত ৮টার পর থেকেই সমাবেশস্থলে ভিড় জমে যায়। মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। কারো হাতে কম্বল আবার কারো হাতে ছিলো হোগল পাটি। রাতে অবস্থান নেওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েই সমাবেশস্থলে এসেছেন এসব নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে যোগ দিতে দুইদিন আগেই বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা হাজির হন বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। রিকশায়, বাইসাইকেলে, মোটর বাইকে, ভ্যানে, ছোট নৌকায় করে মানুষজন ছুটে এসেছেন সমাবেশে যোগ দিতে। তাদের অনেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন রাত্রী যাপনের উপকরণ।
শুকনা খাবার, পানিও বহন করেন সঙ্গে। সমাবেশের একদিন আগে গতকাল বিকালেই উদ্যান পূর্ণ হয়ে যায় নেতাকর্মীতে। সেখানে তারা মিছিল-স্লোগানে নিজেদের উপস্থিতি জানান নেন। সমাবেশে যোগ দেয়া নেতাকর্মীরা জানান, পথে পথে বাধা উপেক্ষা করে তারা সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। গতকাল রাত এবং শনিবার সকালের মধ্যে লোকারণ্য হয়ে উঠবে গোটা বরিশাল শহর। কোনো বাধাই নেতাকর্মীদের আটকে রাখতে পারেনি। দুইদিন আগেই সমাবেশে মানুষের স্রোত নামায় উজ্জীবিত নেতারা। ব্যাপক মানুষের উপস্থিতির কারণে আজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয়ে যাবে সমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। বেলা ১১টার পরই সমাবেশ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ওদিকে বিএনপি’র সমাবেশে লোক ঠেকানোর উদ্দেশ্যে যে ধর্মঘট দেয়া হয়েছে এতে বিএনপি’র সমাবেশে খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, বাধা দেয়ায় দ্বিগুণ উৎসাহে মানুষ ছুটে আসছে। উল্টো দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বিভাগীয় শহরে আসতে পারেননি। বিভিন্ন কাজে যারা বরিশালে এসেছিলেন তারা ফিরতে পারছেন না।
এরমধ্যে নিয়মিত পরীক্ষা, চাকরিপ্রার্থী, বিদেশগামী যাত্রী ও রোগীদের ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়েছে। এই ভোগান্তির কারণে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, যেসব অজুহাতে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই। সরকারের নির্দেশে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেই এই ভোগান্তি তৈরি করা হয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। গতকাল সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে জুমার নামাজ পড়েন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। আগেই বরিশালে আসা নেতাকর্মীদের কেউ উঠেছেন হোটেলে, কেউবা আত্মীয়স্বজনের বাসায়। আবার কেউ কেউ সমাবেশস্থলে কাগজ, পলিথিন, পাটি বা কাপড় বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। খোলা আকাশের নিচেই তারা রাত যাপন করেন। এ ছাড়া ঘাটে রাখা লঞ্চের ডেকেও রাত কাটান অনেক নেতাকর্মী। সেখানে রান্নাবান্নার আয়োজনও করা হয়। গতকালই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বরিশালে পৌঁছেছেন। কেন্দ্রীয় অনেক নেতা আগে থেকেই বরিশালে অবস্থান করে সমাবেশ আয়োজন তদারকি করছিলেন। গতকাল সমাবেশে লোক সমাবেশ দেখে কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, আজ স্মরণকালে বৃহৎ সমাবেশ হবে বরিশালে।