ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক, গাড়ি, বাস কিংবা হুডতোলা রিকশায় বৃষ্টির ঝাপটা সামলেই রওনা হতে হয় কর্মক্ষেত্র বা ক্লাসে। বৃষ্টির এই সময়ে মেকআপ ঠিক রাখাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। অফিস হোক বা ক্লাস, পরিপাটি থাকতে হয় নারীদের। আর দাওয়াত কিংবা পার্টির বেলাও রোদ হোক বা বৃষ্টি, সাজটাও থাকা চাই সুন্দর।
বৃষ্টির দিনে সাজের বেলায় প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে পানির কথা। এমন দিনে চলতে-ফিরতে বৃষ্টির ঝাপটা গায়ে লাগাটাই স্বাভাবিক। এ জন্য পানি নিরোধক অর্থাত্ ওয়াটার প্রুফ মেকআপ উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। এখন বাজারে ওয়াটার প্রুফ মাশকারা, কাজল, আইলাইনারসহ অনেক জিনিস পাওয়া যায়; যেগুলো পানিতে ভিজলেও নষ্ট হয় না। এমন উপকরণ ব্যবহার করলে বৃষ্টির দিনেও সুরক্ষিত থাকবে সাজ।
বৃষ্টির দিনে আমাদের ত্বক আর্দ্র ও কোমল থাকে। তাই ত্বকের টোন বুঝে মেকআপ করলেই সুন্দর দেখাবে। ফাউন্ডেশন বেছে নিতে হবে ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। ত্বকের সঙ্গে মেকআপের পুরোপুরি সামঞ্জস্য আনতে প্রাইমার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ফাউন্ডেশন ব্যবহারের আধাঘণ্টা আগে ত্বকে প্রাইমার ব্যবহার করা ভালো। এতে ত্বকের সঙ্গে মেকআপ সুন্দরভাবে মিশে যাবে। এমন দিনে ভারী মেকআপ না করাই ভালো। ছিমছাম ও মিনিমাল মেকআপেই বৃষ্টির দিনে ভালো লাগে মেয়েদের। মেকআপ করতে হবে এমন, দেখলে যেন মনে হয় কোনো মেকআপই করা হয়নি। বরং চেহারার স্নিগ্ধতা ও সজীবতাটুকু তুলে ধরতে পারলেই ভালো। সাজে হালকা গোলাপি আভাও এমন দিনে সুন্দর লাগবে। এ জন্য হালকা কনট্যুর করে লাইনের ওপরে হালকা গোলাপি ব্লাশন দিলে চেহারায় ফুটে উঠবে গোলাপি আভা। হালকা মেকআপেও চেহারায় উজ্জ্বলতা এনে দেবে হাইলাইটার।
বর্ষায় উজ্জ্বল রঙের পোশাক মানিয়ে যায় বেশ। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপ, ফতুয়া, গাউন, কুর্তি—সব ধরনের পোশাকই পরা যাবে এখন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, পোশাকের ম্যাটেরিয়াল যেন আরামদায়ক আর বৃষ্টি উপযোগী হয়। নীল শাড়ির তো তুলনাই হয় না বৃষ্টিদিনের সাজে।
আইশ্যাডো ব্যবহারের বেলায় ম্যাট আইশ্যাডো বেছে নিতে পারেন। সাজ যদি হয় দিনেরবেলার, তবে বেজ রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি দাওয়াতে যেতে হয়, তবে কিছুটা গাঢ় রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে, আইশ্যাডো যেন খুব বেশি গাঢ় না হয়।
বাদলদিনে সবার আগে মাথায় রাখতে হয় পোশাকের ম্যাটেরিয়াল বা ফ্যাব্রিকের ওপর। শিফন, জর্জেট, লিনেন, সিল্ক—মোদ্দাকথা যেসব কাপড় বৃষ্টিতে ভিজলেও দ্রুত শুকিয়ে যায়, সেসবই পরা ভালো। এগুলোর সঙ্গে এমন দিনে ভালো লাগে মিনিমাল টোনের সাজ
বৃষ্টির দিনে যেকোনো সাজ ও পোশাকের সঙ্গে ঝুঁটি বা উঁচু খোঁপা করতে পারেন। দেখতে সুন্দর লাগবে। যেহেতু গরম বা চুল ঘামার ভয় নেই, তাই চুলের সাজে গর্জিয়াস যেকোনো স্টাইলও করা যাবে। হাতখোঁপা করেও তাতে গুঁজে দিতে পারেন কাঠগোলাপ, বেলি বা চাঁপা ফুল। খোলা চুলের সৌন্দর্যও দারুণ দেখাবে।
শাড়ি হোক বা অন্য পোশাক—সাজে স্নিগ্ধ, সতেজ লুক চাই শাড়ি : বিশ্বরঙ
এবার সাজ ও পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না বেছে নিন। বর্ষার সাজে কাঠ, পাথর, মেটাল, কাচ, সোনা, রুপাসহ সব গয়নাই মানিয়ে যায়। দরকার শুধু পোশাক ও সাজের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ঠিকঠাক গয়নাটি বেছে নেওয়া। পোশাকের রঙের বিপরীত রঙের গয়না বেছে নেওয়াটাই ভালো। এতে ফুটবে ভালো। তবে গয়নার বাড়াবাড়ি আবার বেশি ভালো লাগবে না। কম গয়নায় সুন্দর দেখাবে এই সময়ের সাজে।
এ সময় পানি নিরোধক জুতা ও ব্যাগই বেশি পরিবেশ উপযোগী। ওয়াটার প্রুফ ব্যাগ হলে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ভিজে নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে না। আর ক্লাস বা অফিসের জন্য প্লাস্টিক বা রাবারের তৈরি জুতা পরতে পারেন। দাওয়াতে চামড়া বা রেক্সিনের জুতাই বেশি মানানসই। সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন জুতা যেন পানিতে ভিজে না যায়।